• ||
  • Wednesday, January 22nd, 2025
  • ||

রোগী দেখতে গেলে কী সওয়াব

রোগী দেখতে গেলে কী সওয়াব


মানুষের শারীরিক সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত। সবাই চান সুস্থ থাকতে। এরপরেও বিভিন্ন সময়ে নানা কারণে অনেকে রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের পাশে দাঁড়ানো মানবিক দায়িত্ব। অসুস্থ ব্যক্তির সেবা যত্ন করা, তার খোঁজ খবর নেয়া ও শান্ত্বনা যোগানো মহানবী (সা.)-এর সুন্নতও। রাসুলুল্লাহ (সা.) যখনই কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যেতেন তখনই তিনি তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন এবং তাকে গুনাহ মাফের সু-সংবাদ দিতেন। এক মহিলা সাহাবী বলেছেন, একবার আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসুল (সা.) আমার সেবা করতে এসে বললেন, হে উম্মে আলা! তুমি সু-সংবাদ গ্রহণ কর। কেননা, মুসলমানদের অসুস্থতার কারণে আল্লাহ তায়ালা তাদের গুনাহসমূহ এমনভাবে দূর করে দেন, যেভাবে আগুন সোনা-রূপার মধ্যেকার ভেজাল দূর করে দেয়। (আবু দাউদ : ৩০৭৯)
     
একজন অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সান্ত্বনার বাণী শোনালে, একটু খোঁজ-খবর নিলে, সেবা-যত্ন করলে তার দুশ্চিন্তা লাঘব হয়, সে অন্তরে প্রশান্তি অনুভব করে। তাই মানবিক বিচারে রোগীর খোঁজ খবর নেয়া ও সেবাযত্ন করা উচিত। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা রোগী দেখতে যাও এবং জানাজায় অংশগ্রহণ করো। কেননা তা তোমাদেরকে পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে। (মুসনাদে আহমদ : ৩/৪৮)
     
রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা ক্ষুধার্তকে খাবার দাও। অসুস্থ ব্যক্তির সেবা কর এবং বন্দি মানুষকে মুক্ত করো। কোনো অমুসলিম ব্যক্তি দুঃখ-কষ্টে থাকলে তার প্রতিও সাহায্যের হাত বাড়ানো উচিত। রাসুল (সা.) মুসলমানদের পাশাপাশি অমুসলিমদেরও সেবা করেছেন। বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ আবু দাউদে বর্ণিত আছে রাসুল (সা.) এক ইহুদি অসুস্থ যুবককে দেখতে গিয়েছিলেন। আর নবীজির পথে কাঁটা বিছানো বুড়িকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে যাওয়া ও সেবা করা তো ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়েই আছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে আরাবি (সা.) ইরশাদ করেছেন, এক মুসলমানের ওপর অপর মুসলমানের ৫টি হক রয়েছে।  তা হচ্ছে- ১. সালামের জবাব দেয়া। ২. হাঁচির উত্তর দেয়া। ৩. দাওয়াত কবুল করা। ৪. অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া। ৫. জানাজায় অংশগ্রহণ করা। (বুখারি : ১২৪০)
     
হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত হয়েছে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, ‘হে আদম সন্তান আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে দেখতে যাওনি। বান্দা বলবে আপনিতো বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক, আমি আপনাকে কিভাবে দেখতে যেতে পারি? তখন আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল। তুমি তাকে দেখতে গেলে আমাকে সেখানে পেতে।’ (মুসলিম : ২১৬২)
     
হজরত আলী (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সকাল বেলা কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, ৭০ জন ফেরেশতা বিকাল পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে। আর বিকালে কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গেলে সকাল পর্যন্ত ৭০ জন ফেরেশতা দোয়া করেন। (তিরমিজি : ৯৬৭)। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণনা এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে সওয়াবের আশায় কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, তাকে জাহান্নাম থেকে ৬০ বছরের দূরে রাখা হবে। (আবু দাউদ : ৩০৯৭)

comment
Comments Added Successfully!