রোজার ১২টি আধুনিক মাসআলা
সময়ের পরিবর্তনে মানুষের জীবনাচারেও এসেছে পরিবর্তন। সর্বক্ষেত্রে আধুনিকতার ছোঁয়া যেন অপরিহার্য। এ থেকে বাদ যায়নি চিকিৎসা ক্ষেত্রও। তাই প্রাচীন সব পদ্ধতির অবসান ঘটিয়ে মানুষ ঝুঁকছে আধুনিক চিকিৎসার দিকে।
এ দিকে ইসলাম সার্বজনীন ও সর্বকালীন। ইসলামের ধারক-বাহকগণ তাই আধুনিক সময়ে নানা সমস্যার সমাধানে আত্মমনযোগ দিলেন এবং বের করে আনলেন স্পষ্ট সব সমাধান।
রোজা ইসলামের প্রধান পাঁচ স্তম্ভের একটি। রোজারও রয়েছে আধুনিক মাসআলা ও বিধিবিধান। নিম্নে ১২টি বিধান আলোচনা করা হলো-
১. চোখে ওষুধ, ড্রপ বা সুরমা ইত্যাদি লাগালে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। (আবু দাউদ : ১/৩৩২)
২. রোজা অবস্থায় রক্ত দেওয়া-নেওয়া দুটোই যায়েয। এর কারণে রোজা ভাঙ্গে না। (ফিকহুন নাওয়াযিল : ২/৩০০)
৩. রোজা অবস্থায় টেস্ট বা পরীক্ষারং জন্য শরীর থেকে রক্ত বের করলে রোজা ভাঙ্গে না। (আলমগিরী : ১/১৯৯)
৪. হৃৎপিণ্ডের অসুস্থতার ফলে যে ওষুধ জিহ্বার নিচে রাখা হয় তার দ্বারা রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে তা বিগলিত হয়ে থুথুর সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে গলা বা পেটের মধ্যে চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে। (শামী : ৩/৩৬৭)
৫. যদি রোজা অবস্থায় এমন ইঞ্জেকশন গ্রহণ করে, যা পেটের মধ্যে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। (জাওরাহিরুল ফিকহ : ১/৩৭৯)
৬. বায়ুপথ দিয়ে কোন ঔষধ প্রবেশ করালে কিংবা সাপোজিটার দিলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। (আলমাওসূআতুত তিব্বিয়া : ৬২৪)
৭. শরীরে স্যালাইন লাগানোর দ্বারা রোজা নষ্ট হবে না। তবে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া দেওয়া অনুচিত। (তাতারখানিয়া : ৩/৩৭৯)
৮. ডায়ালাইসিস করার দ্বারা রোজা ভঙ্গ হবে না। (তাতারখানিয়া : ৩/৩৭৯)
৯. রোজা অবস্থায় অক্সিজেন নেওয়ার দ্বারা রোজা নষ্ট হয় না। (আয়েনায়ে রমজান : ৬৫)
১০- হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ঘ্রাণ নেওয়ার দ্বারা রোজা ভাঙ্গে না। (মারাকিল ফালাহ : ৫৪৩)
১১. যদি পেট টেস্টের জন্য পেটের মধ্যে নাক বা গলা দিয়ে কোনো নল প্রবেশ করানো হয় আর তার মধ্যে কোনো ওষুধ মিশ্রিত করা হয়, তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। (মুফতিরাতিস সিয়ামুল মুআ’সারাহ : ৪৫-৫২)
১২- রোজা অবস্থায় করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করা যাবে। কারণ, করোনাভাইরাসের টিকা মাংসপেশিতে গ্রহণ করা হয় এবং তা সরাসরি খাদ্যনালি ও পাকস্থলীতে প্রবেশ করে না। তাই রমজান মাসে রোজাদার দিনের বেলায় শরীরে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। (আপকে মাসায়েল)