রোজাদার দোকানদার
ভূমিকাঃ রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অপার মহিমা নিয়ে বছর ঘুরে আসে মাহে রমজান। অথচ এ পবিত্র মাসের আগমনকে পুঁজি করে একশ্রেণীর কালোবাজারি অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও দ্রব্যসামগ্রীর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। ফলে বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঘটে। এতে রোজাদার সাধারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষকে নিদারুণ ভোগান্তি পোহাতে হয়।
কোরআন ও হাদিস কি বলেঃ
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশে খাদ্যপণ্য মজুত ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।এধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড থেকে ধর্মপ্রাণ ব্যবসায়ীদের সব সময় বিরত থাকা উচিত। কেননা, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলা বেচাকেনাকে বৈধ ও সুদকে অবৈধ করেছেন।’(সূরা আল-বাকারা, আয়াত-২৭৫)
হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘ব্যবসায়ী যদি সীমাতিরিক্ত মূল্য গ্রহণ করে এ সুযোগে যে ক্রেতা পণ্যের প্রকৃত মূল্য জানে না, তাহলে এই অতিরিক্ত পরিমাণের মূল্য সুদ পর্যায়ে গণ্য হবে।’
মাহে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চাহিদা ক্রমেই বেড়ে যায়। একশ্রেণীর সুযোগসন্ধানী কালোবাজারি, মজুতদার, মুনাফাখোর ও অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যদ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘মজুতদার খুবই নিকৃষ্টতম ব্যক্তি। যদি জিনিসপত্রের দাম হ্রাস পায় তবে তারা চিন্তিত হয়ে পড়ে। আর যদি দর বেড়ে যায় তবে আনন্দিত হয়।’(মিশকাত)এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.)আরও বলেছেন, ‘কেউ যদি মুসলমানদের থেকে নিজেদের খাদ্যশস্য আটকিয়ে রাখে, তবে আল্লাহ তাআলা তার ওপর মহামারি ও দারিদ্র্য চাপিয়ে দেন।’ (ইবনে মাজা ও বায়হাকি)’
উপসংহারঃ সুতরাং আসুন, মাহে রমজানে ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইসলামের বিধিবিধান মেনে চলি। মুনাফাখুরি, মজুতদারি, ফাটকাবাজারি, কালোবাজারি ও সুদসহ অবৈধ পন্থায় লেনদেনে অর্থ উপার্জন থেকে বিরত থাকি।