ভোগের নয়, ত্যাগের মাস রমজান
ভূমিকাঃ রমজান রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। মুসলিম নর-নারীর কাছে রমজান মাস বহু কাঙ্ক্ষিত। রমজান আমাদের সংযমী হওয়ার শিক্ষা দেয়। শুধু পানাহার থেকে দিনের বেলায় বিরত থাকাই সিয়াম সাধনার মূল উদ্দেশ্য নয়, পানাহার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি নিজের মুখ ও জিহ্বাকে সংযত রাখতে হবে।
কোরআন কি বলেঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য রমজানের সিয়ামকে ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। (সূরা বাকারা-১৮৩)।
হাদিস কি বলেঃ অনেককেই রমজানে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে অসংযমী হতে দেখা যায়, যা একেবারেই অনুচিত। অপরিমিত খাওয়া দাওয়ার ফলে ইবাদতে ব্যাঘাত ঘটে, আসল উদ্দেশ্য হাসিল হয় না। এছাড়া রোজা রেখে আমাদের অসদাচরণ ও খারাপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেক রোজাদার আছেন রোজা রেখেও দ্রুত রেগে যান কিংবা মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। অনেকে মিথ্যা গিবত ও চোগলখুরিতে লিপ্ত হন। এর দ্বারা রোজার উপকারিতা নষ্ট হয়ে যায়, সাওয়াবও বিফল হয়। বোখারির এক বর্ণনায় হযরত আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে বর্ণিত, নবি করিম (স) বলেন ‘যে ব্যক্তি রোজা রাখা অবস্থায় মিথ্যা কথা ও কাজ পরিত্যাগ করে না, তার পানাহার ত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’
ইসলামের বিধান অনুযায়ী সিয়াম শুধু উপবাসের নাম নয়; এটি এক ধরনের কঠিন নিয়মতান্ত্রিক সাধনা। মাহে রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মুমিন বান্দার অত্যন্ত সচেতনভাবে কাটানো উচিত। তাকে পরকালীন জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সামনে রেখে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
উপসংহারঃ সার্বিক অর্থে রমজান হচ্ছে একটি প্রশিক্ষণের মাস, আখেরাত অর্জনের মাস, আত্মসংযম ধৈর্য ও সহনশীলতার মাস। এ মাসে নেক কাজের দিকে যেমন বেশি বেশি অগ্রসর হতে হবে, তেমনি মুক্ত থাকতে হবে সব ধরনের পাপাচার থেকে। রাব্বুল আলামিন আমাদের রমজানের সব শিক্ষা জীবনের সর্বস্তরে বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।