তারাবীহতে তাড়াতাড়ি
ভূমিকাঃ মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহাঅনুগ্রহের মাস রমজান। এ মাসের মর্যাদা অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি। এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত হলো কিয়ামুর রমজান তথা তারাবিহ নামাজ। রমজান মাসে বিভিন্ন মসজিদে মহল্লায় তারাবিহ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
একটা বিষয় পরিলক্ষিত হয় যে মসজিদে তারাবিহ নামাজ তাড়াতাড়ি আদায় করা হয়, আমাদের মধ্যে অনেকেই সে সব মসজিদ খুঁজে খুঁজে বের করেন। অনেক দূর হলেও সে মসজিদে গিয়ে তারাবিহ নামাজ আদায় করেন। অথচ তারাবিহ নামাজ ধীর স্থিরভাবে আদায় করাই হলো নিয়ম। প্রতিযোগিতা করে তারাবিহ নামাজ আদায় করা সুন্নাতের পরিপন্থী।
হাদিস কি বলেঃ তারাবিহ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘বিশ্রাম করা’। প্রতি চার রাকাআত নামাজ শেষ করে যাতে একটু বিশ্রাম গ্রহণ করা যায় তাই একে তারাবিহ বলা হয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) এর তারাবিহ নামাজ ছিল অনেক দীর্ঘ। এমনকি কিয়াম, রুকু, সিজদা সবাই ছিল খুব লম্বা ও ধীরস্থির। হাদিসে এসেছে-
হজরত সাঈর ইবনে ইয়াযিদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তারাবিহতে শত শত আয়াত পড়তেন। ফলে সুদীর্ঘ সময় দাঁড়ানোর কারণে আমরা লাঠির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। (মুয়াত্তা মুহাম্মদ)
করনীয় ও বর্জনীয়ঃ তারাবিহ নামাজে ইমাম হোক আর মুসল্লি হোক প্রতিযোগিতা করে তারাবিহ পড়ার প্রবনতা পরিহার করা উচিত। অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, তারতিলের সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত আর দ্রুততার সঙ্গে তেলাওয়াতের মাঝে খুব বেশি পার্থক্য হয় না। সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মিনিটের কমবেশি। তাই মসজিদ কমিটি ও সাধারণ মুসল্লিদের উচিত, একটু বিলম্ব হলে বিরক্তি প্রকাশ না করে বরং ধীরস্থীরভাবে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে হাফেজ সাহেবদেরকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করা।
উপসংহারঃ দ্রুততার সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াতের সংস্কৃতি থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে। মুসল্লিদের বুঝাতে হবে যে, কোরআনে কারিমেই ধীরে ধীরে স্পষ্ট উচ্চারণে কোরআন তেলাওয়াত করার কথা রয়েছে। তাই আসুন, তাড়াহুড়ো বা দ্রুত নয়; বরং ধীরস্থিরভাবেই তারাবিহ নামাজ আদায় করি।