ইফতার যেনো না হয় ভোজের আয়োজন
ভূমিকাঃ রমজান মাস কল্যাণ, ক্ষমা ও মুক্তির মাস। তবে কথা হচ্ছে, পুণ্যের এ বসন্তকালে আমাদের কিছু ভুলের কারণে পুণ্যের পরিবর্তে আমরা আবার পাপ-পঙ্কিলতায় তলিয়ে যাচ্ছি না তো? এই যেমন অতিভোজন বা অপচয়ে!
হাদিস কি বলেঃ আমরা অনেকেই মনে করি, ‘রমজান মাসে সাহরি ও ইফতারে যত ইচ্ছা তত খাও, আল্লাহ তাআলা এই খাওয়ার হিসাব নেবেন না।’ যদিও কোরআন-হাদিসের কোথাও এমন কথা বলা হয়নি। বরং এটা করতে নিষেধ করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি পেট ভর্তি করে খানা খায়, তার ওই পেট একটি নিকৃষ্ট পাত্র।’ (আহমাদ, হাদিস : ৩, পৃষ্ঠা ১৬৪)তাই প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) অতিভোজনকে পছন্দ করতেন না কখনোই। সে জন্যই তিনি মুমিনদের বলেছেন ‘পেটের তিন ভাগের এক ভাগ খাবার, এক ভাগ পানীয় দিয়ে পূরণ করতে; অন্য ভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখতে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮০)
তিরমিজি শরিফের অন্য বর্ণনায় আছে, রোজার মাসে রাসুল (সা.) মাগরিবের আগে কয়েকটি ভেজা খেজুরের মাধ্যমে ইফতার করতেন। ভেজা খেজুর না থাকলে সাধারণ শুকনো খেজুর। এর ব্যতিক্রম হলে কয়েক ঢোক পানিই ছিল রাসুল (সা.)-এর ইফতার। অথচ আমরা সেই নবীর উম্মত হয়ে সাহরি ও ইফতারে হয়ে পড়ছি অসংযমী। সমাজে যারা বিত্তশালী, তাদের তো কোনো কথাই নেই। রোজা রাখুক বা না রাখুক, ইফতারে তাদের ভোজনবিলাসিতার কমতি নেই। অথচ রমজান কোনো ভোজনবিলাসিতার মাস নয়। রমজান হলো আত্মশুদ্ধির মাস।
উপসংহারঃ ভুলে গেলে চলবে না যে রমজান হলো সিয়াম সাধনার মাস। আর সাধনা মানেই হচ্ছে সব পার্থিব লোভ-লালসা, ভোগ-বিলাসিতা, অপচয়-অপব্যবহার ও সব ধরনের রিপুর দমন। অথচ আমরা অভ্যস্ত অতিভোজন আর অপচয়ের মহোৎসবে।মহান আল্লাহ আমাদের এই অপকর্ম থেকে হেফাজত করুন। আমিন!