আমাদের রোজা ও অন্যান্য নবী-রাসূলদের রোজা
ভূমিকাঃ রোজার ইতিহাস দীর্ঘতর। আগেকার উম্মতরাও যে রোজা পালন করতেন এবং তাদের ওপরও যে রোজা ফরজ ছিল, সে সম্পর্কে কোরআনুল কারীমের সুস্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে।
কোরআন কি বলেঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন- রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পার।’ (সূরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)।
রুহুল মা’আনী, আল বিদায়া প্রভৃতি তাফসিরগ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘আল্লাযিনা মিন ক্বাবলিকুম’ তথা ‘তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর’ বলে বুঝানো হচ্ছে, হযরত আদম আ. থেকে রাসূল সা. পর্যন্ত সকল যুগের মানুষ, তথা সকল নবীর শরীয়তের রোজা পালনের বাধ্যবাধকতা ছিল নামাজের মতোই। হযরত আদম আ.-এর যুগে প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখার বিধান ছিল। হযরত দাউদ আ. একদিন পর একদিন রোজা রাখতেন। হযরত মারিয়াম আ. এর ব্যাপারে কোরআন মাজীদে আছে, ‘আপনি বলুন, আমি আল্লাহর জন্যে রোজা পালন করছি, আজ আমি কারো সাথে কথা বলব না। (সূরা মারিয়াম : আয়াত ২৬)।
তাফসীরে হক্কানীতে তওরাত তথা বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্ট এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে, ইহুদীদের ওপর সপ্তম মাসের ১০ তারিখে কাফফারার রোজা রাখা ওয়াজিব ছিল। প্রাচীন খ্রিস্টানরাও সেই রোজা রাখত বলে কথিত আছে। হযরত মুসা আ. তুর পর্বতে ৪০ দিন রোজা রেখেছেন। হযরত দানিয়াল আ. একাধারে তিন সপ্তাহ রোজা পালন করেছেন।
হাদিস কি বলেঃ আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ বলেছেনঃ আমাদের রোযা এবং আহলে কিতাব অর্থাৎ ইহুদী ও খৃস্টান সম্প্রদায়ের রোযার মধ্যে পার্থক্য হল সেহরী খাওয়া। (সহীহ মুসলিম শরীফঃ-২৪১৬) এই হাদিস থেকে আহলে কিতাব অর্থাৎ ইহুদী ও খৃস্টানদের রোজা রাখার বিষয়টি প্রমাণিত হয়।
উপসংহারঃ বর্তমান যুগেও আহলে কিতাবের অনুসারী ধর্মপরায়ণ লোকেরা বছরের বিভিন্ন সময়ে রোজা পালন করে আসছে।