সুদের সঙ্গে আপষ নেই
ইসলাম যেসব বিষয়ে সর্বোচ্চ কঠোরতা দেখিয়েছে, তার মধ্যে সুদ অন্যতম। আল্লাহ তায়ালা সুদ নিষিদ্ধ করে বলেছেন, ‘আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন।’ (সুরা বাকারা : ২৭৫)। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার গোশত সুদের বর্ধিত হলো তার জন্য জাহান্নাম ই হলো যথাযথ বাসস্থল। হজরত জাবের (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে শরীরের রক্ত-মাংস হারাম থেকে গঠিত, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে রক্ত-মাংস হারাম মাল দ্বারা গঠিত তার জন্য জাহান্নামই উপযুক্ত স্থান।’ (মুসনাদে আহমদ : ১৩৯১৯)
সূদ প্রসঙ্গে ইসলামের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। সুদের বিরুদ্ধে আল্লাহ তায়ালা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘হে ঈমানদারেরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যে অংশ বাকি আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা প্রকৃত ঈমানদার হও। যদি তোমরা তা না করো তাহলে আল্লাহ ও তার রাসুলের পক্ষ হতে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে রাখো।’ (সুরা বাকারা : ২৭৮-৭৯)। সুদের লেনদেন ও সুদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি কঠোর ও সতর্কবাণী উচ্চারণ করে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘যারা সুদ খায়, সুদ দেয়, সুদের হিসাব লেখে এবং সুদের সাক্ষ্য দেয়, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের সবার ওপর লানত করেছেন। অপরাধের ক্ষেত্রে এরা সকলেই সমান।’ (মেশকাত : ২৮০৭)।
সুদ অত্যন্ত জঘন্যতম পাপ। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পাপের ৭০টি স্তর রয়েছে। যার নিম্নতম স্তর হলো সুদের; আর তা মায়ের সাথে যেনা করার সমতূল্য।’ (ইবনে মাজা : ২২৭৪)। সুদের বিষয়ে কমবেশির কোনো তারতম্য নেই। সুদের সাথে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র সংশ্লিষ্টতা থাকাও মহাপাপ।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে হানজালা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি এক দিরহাম রৌপ্যমুদ্রা সুদ হিসাবে জ্ঞাতসারে গ্রহণ করে, তাতে তার পাপ ৩৬ বার ব্যভিচার করার চেয়েও অধিক হয়।’ (মেশকাত : ২৮২৫)। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘সুদের দ্বারা সম্পদ যতই বৃদ্ধি পাক না কেনো, তার শেষ পরিণতি হলো চরম নিঃস্বতা ও দারিদ্র।’ (মেশকাত : ২৮২৭)। এসব বর্ণনায় স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, সুদ ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম। দুনিয়াতে এর শেষ পরিণতি নিঃস্বতা আর পরকালে চিরস্থায়ী জাহান্নাম। তাই কম হোক বেশি হোক সুদের সঙ্গে সব রকম সম্পৃক্ততা বর্জন করা একান্ত জরুরি। সুদের সঙ্গে আপষের কোনো সুযোগ নেই।