পরকালে কে শাস্তি পাবে, মানুষের আত্মা নাকি শরীর?
- পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে’। আর মৃত্যুর পর পর মানুষকে কিছু প্রশ্নের সম্মুখিন করা হবে। কবরে রাখার খানিকটা পর-ই তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে-
- ১. ‘মার রাব্বুকা’ তথা তোমার প্রতিপালক কে? ২.
- ‘মান দীনুকা’ তথা তোমার ধর্ম কী ছিল?
- ৩. মহানবী (সা.) কে দেখিয়ে বলা হবে ‘মান হাযার রাজুল’ তথা এ ব্যক্তিটি কে?
- কবরের ব্যক্তি মুমিন হলে ১ম প্রশ্নের উত্তরে বলবে, ‘রাব্বি আল্লাহ’ তথা আমার প্রভু আল্লাহ। ২য় প্রশ্নের উত্তরে বলবে, ‘দীনিয়াল ইসলাম’ তথা আমার ধর্ম ইসলাম। ৩য় প্রশ্নের উত্তরে বলবে, ‘হাযা রাসুলুল্লাহ’ তথা তিনি আল্লাহর রাসুল। আর ব্যক্তি যদি মুমিন না হয়ে গুনাহগার হয় তাহলে সে এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না। আর যারা এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না তাদের জন্য রয়েছে কবরের শাস্তি।
- প্রশ্ন হলো এসব শাস্তি কি মৃত ব্যক্তির শরীরে হবে, নাকি আত্মায় হবে?
- এ বিষয়ে ইসলামের বক্তব্য হলো- কোনো ব্যক্তি মারা গেলে সে তার ঈমান ও আমল অনুযায়ী শান্তি বা শাস্তিতে থাকে। আর তা শরীর এবং রূহ উভয়েরই ঘটবে। রূহ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পর তা হয়তো শান্তিপ্রাপ্ত না হয় সাজাপ্রাপ্ত হবে। কখনো অল্প সময়ের জন্য সাজা দিয়ে তা শান্তিতে পরিণত করে দেওয়া হবে যদি সে পাপ থেকে পবিত্র হয়ে যায়। কখনো রূহ শরীরের সাথে মিলিত হলে তখন শরীরের সাথে রূহেরও শান্তি বা শাস্তি ভোগ করতে হবে। সুতরাং কবর হয় জান্নাতের বাগিচা না হয় জাহান্নামের গুহা।
- বর্ণিত আছে, যে কেউ মারা যাওয়ার পর যদি শাস্তি বা শান্তির হকদার হয়, তবে সে তার পুরোপুরি অংশ পাবে, তাকে কবর দেওয়া হোক বা না হোক। আল্লাহ তায়ালাই শ্রষ্টা, উদ্ভাবক এবং প্রত্যেক জিনিসের ওপর ক্ষমতাবান। অতঃপর যখন মহা প্রলয়ের দিন আসবে তখন রূহ শরীরে ফিরিয়ে দেওয়া হলে তারা তাদের কবর থেকে তাদের রবকে হিসাব দেওয়ার জন্য এবং প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য উঠে দাঁড়াবে। [সূত্র : মাজমুআ ফাতওয়া ৪/২৮৪ ও আর রূহ পৃষ্ঠা নং ৩৩২-৩৩৩]