ফরজ ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব
মাহমুদুল হাসান
পার্থিব ও পরকালীন জীবনে সাফল্য লাভের প্রধান উপায় হচ্ছে নিয়মিত নির্ধারিত ফরজ ইবাদত পালন করা। ইবাদতের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে। তাঁর দয়া, অনুগ্রহ ও ক্ষমা লাভ করে। আল্লাহ বান্দার ওপর যেসব ইবাদত নির্ধারণ করেছেন সেগুলোর মধ্যে ফরজের মর্যাদা সবার ওপরে। এর মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহর সর্বাধিক নৈকট্য লাভ করে থাকে। আল্লামা ইবনে আবিল ওয়ারদ (রহ.) বলেন, ‘ইসলামের মূল ভিত্তি তার ফরজ বিধানগুলো। আর ফরজ বিধান দুই প্রকার- এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুল যা করার নির্দেশ দিয়েছেন। দুই. আল্লাহ ও তাঁর রাসুল যা করতে নিষেধ করেছেন।’ (হিলয়াতুল আউলিয়া : ২৪২)
ফরজ ইবাদত আল্লাহভীতির প্রমাণ বহন করে। ফরজ ইবাদতে যত্নবান হওয়া আল্লাহভীতির প্রমাণ। আল্লাহভীরু ব্যক্তিরাই ফরজ ইবাদতের প্রতি সবচেয়ে বেশি যত্নবান। হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) বলতেন, ‘রাতে তাহাজ্জুদ আর দিনে রোজা রাখা প্রকৃত আল্লাহভীতি নয়; বরং আল্লাহভীতি হলো আল্লাহ যা ফরজ করেছেন তা আদায় করা এবং যা নিষিদ্ধ করেছেন তা পরিহার করা। এগুলো আদায় করার পর যদি কোনো নেক আমল করা হয় তবে কল্যাণের ওপর কল্যাণ বলে বিবেচিত হবে।’ (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ২/২৬৮)
হজরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, এলোমেলো চুলসহ একজন গ্রাম্য আরব রাসুল (সা.)-এর কাছে এলো। অতঃপর বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে বলুন, আল্লাহ আমার ওপর কোন নামাজ ফরজ করেছেন?
তিনি বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় করো তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর সে বলল, বলুন! আল্লাহ আমার ওপর কোন রোজা ফরজ করেছেন? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রমজান মাসের রোজা; তবে তুমি যদি কিছু নফল রোজা আদায় করো তা ভিন্ন কথা।
সে বলল, বলুন! আল্লাহ আমার ওপর কী পরিমাণ জাকাত ফরজ করেছেন? বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন। এরপর লোকটি বলল, ওই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আল্লাহ আমার ওপর যা ফরজ করেছেন, আমি এর মধ্যে কিছু বাড়াব না এবং কমাবও না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল।’ (বুখারি : ১৮৯১)। ফরজ ইবাদত আদায় না করলে বা তাতে উদাসীনতা করলে পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। আল্লাহ তায়ালা ইসলামের যাবতীয় ফরজ যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।